বিনা স্বদেশী ভাষা, পুরে কি আশা?Rose

লিখেছেন লিখেছেন মামুন ২৭ আগস্ট, ২০১৪, ১২:৪০:১৬ দুপুর



সবে মাস্টার্সের রেজাল্ট বের হয়েছে। কোথায়ও তখন পর্যন্ত গোলামীর জিঞ্জির পড়ে যাওয়া-আসা শুরু করিনি। পেপারে জব অফারগুলো দেখে দেখে কল্পনায় বিচরণ করছিলাম। এই সময় আব্বা আমাকে বসে না থেকে, ভুঁইয়া একাডেমিতে স্পোকেন ইংলিশ এবং কম্পিউটার লার্নিং এর মাল্টিপল মেম্বারশীপ করে সেখানে সময় কাটাতে পাঠালেন। সময় তখন ১৯৯৮ ইং।

একদিন আব্বার এক বন্ধুর পরিচিত এক আমদানিকারক আমাদের চিটাগং এর হালিশহরের বাসায় বেড়াতে এলেন। তিনি বিদেশ থেকে কেমিকেল আমদানি করেন। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে ওনার কিছু কাজও ছিল। আব্বার পোষ্টিং তখন সেখানে। ইতোমধ্যে আব্বার সেই বন্ধুর ছেলে একটি সি এন্ড এফ লাইসেন্স করে কাজ শুরু করেছে। সেও তখন আমাদের বাসায়। ঐ আমদানিকারকের মাল খালাসের দায়িত্ব নিয়েছে আব্বার বন্ধুর সেই ছেলে।

একদিন আমাকে সহ ওনারা দু'জন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে গেলেন। ওনাদের মালামাল খালাসের ব্যাপারে কি এক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমি এমনিতে গেলাম। যাহোক, সেই আমদানিকারক, সি এন্ড এফ এর মালিক এবং আমি- এই তিনজন সহকারী কমিশনার (কাস্টমস) এর কক্ষে প্রবেশ করলাম। সেখানে ঢুকেই সেই আমদানিকারক সহকারী কমিশনারের সাথে চোস্ত ইংরেজীতে কথা বলা শুরু করলেন। সহকারী কমিশনার আমদানিকারকের কথা চুপচাপ শুনে গেলেন। এরপর বললেন, ' আপনি মনে হয় ইংরেজী একটু বেশী ভালো জানেন। এখানে কি কোথায়ও লেখা আছে, বাংলায় কথা বলা নিষেধ?' আমি এবং আব্বার বন্ধুর সেই ছেলে, দুজনেই লজ্জায় মাথা নিচু করে রইলাম। আমদানিকারকের মুখে আর কোনো কথা জোগালো না। তিনি সম্পর্কে আমাদের দুজনের আঙ্কেল হন। তাই আমরা লজ্জাটা একটু বেশী পেয়েছিলাম।

এই প্রসঙ্গটা এই জন্য আজ লিখলাম, আমি প্রায় সময়ই দেখি, অনেকে শুধুমাত্র নিজেকে অতি আধুনিক প্রমাণ করার জন্য পরিচয় হবার সাথে সাথেই ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করেন। আমি একেবারে ইংরেজী কম বুঝি। তাই আমার খুব অসুবিধে হয়... কিছুটা বিব্রতও হই। আর আমার আশেপাশে যারা থাকেন তারাও আমার বিব্রত অবস্থা দেখে কষ্ট পান। প্রয়োজন ছাড়া বাংলা ভাষাভাষীদের সাথে ইংরেজী বলার দরকারটা-ই বা কি? আমার বাসায় একজন শিক্ষক আমার ছোট ভাইকে পড়াতে আসতেন। তিনি আমাকে দেখলেই সব সময় চোস্ত ইংরেজীতে কথা বলা শুরু করতেন। এজন্য আমি তিনি যে সময়টা বাসায় পড়াতেন, আমি পারলে সেই সময় বাইরে থেকে কাটিয়ে আসতাম।

আমার এই পোষ্টের উদ্দেশ্য, ইংরেজী বিরোধিতা নয়। তবে নিজেদের ভিতর কথা বার্তা বলার সময় কেন এই মানষিকতা? ফেব্রুয়ারী মাস এলেই একেবারে বাংলা বাংলা করে জান দিয়ে ফেলি, অথচ একজন বাঙালি (ভাষার দিক দিয়ে, জাতি হিসেবে এখন বাংলাদেশী) হয়েও অন্য একজন বাঙালির সাথে কথাবার্তায় কেন এই ইংরেজি প্রীতি?

কেউ কেউ আবার আমাদের এক সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মত, ' উই আর লুকিং ফর শত্রুজ' জাতীয় কথা বার্তা বলে থাকেন। এগুলোও পরিহার করা উচিত। আমাদের বাংলা কত মিষ্টি ভাষা! এই ভাষায় রচিত হয়েছে কত কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস। নিজেদের মায়ের ভাষাকে যদি সত্যিই হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতাম, তবে এইভাবে কথাবার্তায় নিজেকে জাহির করতে ফট করে ইংরেজীতে কথা বলা শুরু করতাম না; কিংবা বাংলা মাধ্যম স্কুল বাদ দিয়ে নিজ সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যম এর স্কুলগুলোতে যে কোনো ভাবেই হোক ভর্তি করানোতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতাম না। কেউ আমার লেখায় ইংরেজী মাধ্যম স্কুলগুলো খারাপ বা নেতিবাচক, ভেবে বসলে ভুল করবেন। আমি এখানে গুরুত্ব কিংবা অগ্রাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরতে চাইছি।

নিজ দেশের ভাষা, সংস্কৃতি আজ বিজাতীয় ভাষা-সংষ্কৃতির নীচে চাপা পড়ে আছে। খুব দুঃখ লাগে যখন নিজের সন্তান ভিডিও গেমস খেলার জন্য পটপট করে গেমসগুলোর নাম বলে, এর ভিতরে একটিও দেশী গেমসকে খুঁজে পাই না! বিনোদনের জন্য দেশীয় চ্যানেলগুলো অবহেলিত থেকে যায়। মেয়েরা আমার হিন্দী চ্যানেলগুলোতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে; কারণ তাঁরা জন্মের পরে দেখে এসেছে, বাবা-মা এগুলোই দেখছে। নিজের মেয়ে শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারছে কি পারছে না, সেটা না দেখে যখন সে ইংরেজী বা হিন্দিতে সাবলীল ভাবে কথা বলে, নিজের মনে কি একটুও আনন্দ লাগে না? কার্টুন চ্যানেলগুলোতে দিনভর আমার মেয়ে বিচরণ করে, এর ভিতরে কোনটি বাংলায় ডাবিং করা? মিনা ছাড়া তেমন মানসম্মত বাংলা কার্টুন কি আমাদের বাংলা চ্যানেলগুলো প্রচার করতে পারছে?

খুব দুঃখ হয় আসলে। দিন দিন অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে। এই অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। কিন্তু কীভাবে হবে জানি না।। Rose

বিষয়: বিবিধ

১৬৯২ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

258726
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : আমি নিজেও ইংরেজীতে খুব দুর্বল।
ইংরেজী প্রাকটিস করার জন্য পারস্পরিক বলা-বলি মেনে নেয়া যায়। তবে নিজেকে অনেক বড় ও বেশী কাবিল দেখানোর জন্য যত্র তত্র প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ইংরেজী বলার কী দরকার। ধন্যবাদ।

আমার বাসায় একজন শিক্ষক আমার ছোট ভাইকে পড়াতে আসতেন। তিনি আমাকে দেখলেই সব সময় চোস্ত ইংরেজীতে কথা বলা শুরু করতেন। এজন্য আমি তিনি যে সময়টা বাসায় পড়াতেন, আমি পারলে সেই সময় বাইরে থেকে কাটিয়ে আসতাম। আমার মতে প্রক্টিসের জন্যই তিনি এমনটি করতেন।
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪১
202412
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য খুব ভালো লাগলো। আপনার কথাই হয়তো বা ঠিক। তিনি আমার সাথে প্র্যাকটিসের জন্যই তখন এমনটি করতেন, কিন্তু আমি আমার ছোট ভাই এর সামনে বিব্রত হতাম। কারণ তার গতিশীল ইংরেজীর সামনে আমি আমার গরুর গাড়ির গতিসম্পন্ন ইংরেজী নিয়ে অনেক পিছনে পড়ে থাকতাম। সেই সময়ের না পারার কষ্টটা আমাকে অনেক দিন ভুগিয়েছে, ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।Good Luck
258727
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : হাচাঁ কেথা কইছেন মশাই! আমাগো হাররোজ বোলচালে কিছু আঙ্গুরেজী আর কিছু বাংগালা শব্দ ইস্তিমাল না কইরলে জাতে উইঠবার হারমু কেমুনে? জাতে উইঠবার লিগ্যা বাংলাগা ত্যাগ করে আঙ্গুরেজী প্রেক্টিস না করলে প্রেস্টিজ পাংচার অইয়া গ্যাঞ্জাম লাইগ্যা যাইবার পারে। ভবিষ্যতে আমাগো ভাষার নাম দিতে অইবো বাংগুরেজী অথবা ইংরেবাংল।
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪২
202413
মামুন লিখেছেন : আপনি যা বলেছেন, আল্লাহ না করুক তা যেন না হয়। তবে আপনি সত্য বলেছেন। এই মানসিকতা পরিহার না করলে একসময় এটাই হয়ে যাবে। ধন্যবাদ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য। অনেক শুভেচ্ছা রইলো।Happy Good Luck
258730
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮
কাহাফ লিখেছেন : স্বীয় ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শণ করার বিষয়ে উতসাহী করতে ঐশী বানী হচ্ছ- "সমস্ত নবী-রাসুল গণ কে তার সম্প্রদায়ের ভাষা-ভাষী করে পাঠানো হয়েছে।" অধুনিকতার রংগিন ফানুসে চড়ে স্বীয় ভাষা কে অবমুল্যায়ণ করা নীচুতার পরিচায়ক। সুন্দর বিষয়ের উপস্হাপনের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। Rose Rose
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৪
202414
মামুন লিখেছেন : আপনার মন্তব্য সব সময়ই নান্দনিক। ধন্যবাদ হাদিসের রেফারেন্স দেবার জন্য। অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।Good Luck Good Luck
258733
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:০৬
আহমদ মুসা লিখেছেন : ইংরেজী ভাষা চর্চা না করলে এ যেন জাতে উঠার সিড়িটাই নসীবে জুঠলো না! জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনে ভিনদেশী বা ভিন্ন জাতীর ভাষা আয়ত্ব করা যেতে পারে। কিন্তু তাই বলে নিজের জাতি সত্বাবোধকে অসম্মান করে, নিজের চারপাশের কথিত ভাষাকে অবজ্ঞা করে শুধু ইংরেজীতে কথা বলায় অভ্যস্ত হওয়া, কথিত প্রেস্টিজ বাড়ানোর জন্য ইংরেজী চর্চা করার অর্থই হচ্ছে নিজের জম্মদাতাকে অশ্বীকার করার নামান্তর।


আপনি কি চট্টগ্রামের লোক? কোথায় থাকেন আপনি? আমারও জন্ম পড়াশুনা এবং কর্মস্থল চট্টগ্রাম শহরেই।
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৯
202416
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে। না ভাই, আমি চট্টগ্রামের লোক না। তবে চট্টগ্রামে আমার বউ এর বাড়ি। বহদ্দারহাট চাদ্গাতে। আমি কলেজ জীবনের শুরু থেকে বিবাহ পরবর্তী সময় ( ১৯৮৭-২০০৪ ইং) চট্টগ্রামে একটানা কাটিয়েছিলাম। এখন সাভারে থাকি। বছরে একবার যাওয়া হয় চাটগাতে।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। অনেক ভাষা জানা ভালো । তবে ভাষা প্রয়োগের স্থান , কাল ও পাত্র ভেদ জানা বিজ্ঞের কাজ। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য। ভালো থাকবেন।Good Luck
258761
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:২৪
হাকিম তালুকদার লিখেছেন : দু’চার’পাচ কলম ভিনদেশী ভাষা না আউড়ালে আমরা জাতে উঠুম ক্যামনে
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩১
202466
মামুন লিখেছেন : জাতে উঠাটা কি খুবই জরুরী আমাদের জন্য? ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইলো।Good Luck
258768
২৭ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:৪৯
আতিক খান লিখেছেন : তোমার আর আমার শ্বশুর বাড়ি এক জায়গায় Applause খুব ভালো একটা মেসেজ দিয়েছ। অনেক ধন্যবাদ Rose Good Luck
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩২
202470
মামুন লিখেছেন : আজ আমিও জানলাম। এরপরের বার চিটাগং এলে, তুমি দেশে থাকলে ইনশা আল্লাহ দেখা হবে। তোমার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।Good Luck Good Luck
258814
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৩
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : শিক্ষাদীক্ষা নাইতো আমাদের। আর ইতিহাসও জানা নাই তাই নিজেদের স্বকীয়তা সম্পর্কে অবগত নাই।
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৮
202473
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আসলে কি করছি, কোথায় যাচ্ছি, আর কেনই বা করছি- আজকাল ভাবে ক'জন। পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ এতটাই আমাদেরকে চেপে ধরেছে যে, দিশেহারা হয়ে কেবলি ছুটছি। আপনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইলো।Good Luck
258845
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:২৭
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আপনার সাথে আমার চিন্তাগত দিক দিয়ে পার্থক্য আছে তবে বাস্তবতাটা বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে বলেছেন। গ্লোবাল ভিলেজে কোন এলাকাই আর পৃথিবীর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারছেনা। মাল্টিন্যাশনাল বিজনেস,হিউস প্রোফিট, খনিজ সম্পদের উপর হস্তক্ষেপ, বিশ্বরাজনীতির জন্য লোকাল Government কে নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির জন্যই সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালানো হয়। যেহেতু ধর্ম, নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ ইত্যাদি বিষয়গুলো বিদেশি বিজনেসের সম্প্রসারণ, কৌশলে মানুষের কাছ থেকে অধিক লভ্যাংশ আদায় ও কোন ভূখন্ডের মানুষকে দাসত্বের শৃংক্ষলে আবদ্ধ করার জন্য বিরাট অন্তরায় এজন্য ধর্ম, নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ ইত্যাদিকে সমাজের মানুষের মন মগজ থেকে দূর করার জন্যই এসবের উপর চালানো হয় আগ্রাসন। আর যারা ধর্ম, নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে চান তাদের উপরেও চলে নির্যাতন। আপনার প্রশ্ন কে রক্ষা করবে??
উত্তর হল রক্ষকেরাই ভক্ষক। আর্থাৎ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য শাসকেরা এসব কর্মকান্ডকে সহায়তা করে যান। মানুষকে বোঝান বিদেশিদের দাসত্বেই মুক্তি। তাই এসব বলে আসলে আমাদের কোন লাভ নেই। এভাবেই চলতে থাকবে আর আপনি হতাশা প্রকাশ করে যাব। তবে ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট বলে একটা কথা আছে সেটার দিকেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি কিন্তু টার্নিং পয়েন্ট কখনো শান্তিপূর্ণ হয়না। এটাই বাস্তবতা।
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৮
202510
মামুন লিখেছেন : আপনার নান্দনিক এবং বিশ্লেষণ ধর্মী মন্তব্যে আমি অভিভূত! কিন্তু একটি প্রশ্ন জাগছে, তা হল, টার্ণিং পয়েন্ট শান্তিপুর্ণ না হোক, এরপরে কি শান্তির আশা করতে পারি? আমাদের কি করনীয় এমন কিছুই নেই, যার দ্বারা আশাবাদী হতে পারি?
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এবং শুভেচ্ছা রইলো।Good Luck
২৭ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
202551
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : টার্নিং পয়েন্ট যদি আরব বসন্তের মত হয় তবে তা থেকে শান্তির আশা করা যায়না। মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ ফুসে উঠেছিল পশ্চিমা পুতুল স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। শাসকদের পতন হলে মানুষ ভেবেছিল তারা বুঝি মুক্তি পেল কিন্তু পশ্চিমারা কৌশলে ঠিকই আবার তা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। আসলে শাসকের অপসারণ কখনো শান্তি আনতে পারেনা কারণ মূল সমস্যা তো সিষ্টেমে। আর যেখানে সিষ্টেমটাই পশ্চিমাদের তৈরী সেখানে কোন শাসক এলো বা গেলো সেটা তো ইমপরট্যান্ট না। যেমন তুরস্কের এরদোগান সরকার। তাদের দাবি তারা ইসলামিক দল তারা এই নিয়ে ৪ বার ক্ষমতায় এলো কিন্তু তারা কি পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণ ও ন্যাটো জোট থেকে বের হতে পেরেছে? পারেনি। অথচ তাদের সেনাবাহিনী ওয়াল্ডের টপ ১০ টা শক্তিধর সেনাবাহিনীর মধ্যে একটা। তারা সিস্টেম চেঞ্জ করতে পারেনি। যখন টার্নিং পয়েন্টে মানুষ শাসকসহ গোটা সিস্টেমটাকেই রিমুভ করতে চাইবে, পশ্চিমারা হুমকি দিলে তারাও পাল্টা হুমকি দিয়ে তাদের মোকাবেলা করার মত সাহস দেখাবে ঠিক তখনি হয়ত অনেক রক্তক্ষয়ের পর শান্তি নামক কিছু আসতে পারে।
259036
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৩:১৭
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : সমস্যাটা আসলেই মারাত্নক, আমরা যারা প্রবাসী আরো বেশি ভুক্তভোগী! শুকরিয়া সুন্দর শেয়ার এর জন্য! Good Luck
২৮ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:০৩
202792
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকবেন।Good Luck
১০
259068
২৮ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:০৫
মামুন লিখেছেন : হ্যা, আপনি ঠিকই বলেছেন। আমাদের সিষ্টেমের আমূল পরিবর্তন না হোক, অনেকাংশে পরিবর্তন হওয়াটা খুবই জরুরী।
আপনার মন্তব্য আমাকে মুগ্ধ করলো আবারো।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাই। @ঘুম ভাঙ্গাতে চাই Rose Good Luck
১১
259296
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:১৮
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : আমরা শুদ্ধভাবে ইংরেজী বলব দূরের কথা, অনেকেই আমাদের গৌরবের মাতৃভাষাও ঠিকমতো জানিনা। বিভিন্ন সাইনবোর্ডে, প্রচারমাধ্যমে ভুল বানানের ছড়াছড়ি দেখলে এমন মনে হয়। বাংলাতেই যখন এ অবস্থা, তখন ইংরেজী নিয়ে আমাদের দুরবস্থা থাকতেই পারে! আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের নাগরিকদের এক বিরাট অংশ ইংরেজীতে বেশ দক্ষ। তাই বলে তো এই নয় যে তাদের দেশপ্রেম নেই বা উন্নতিতে কোন দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইংরেজীর প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেজন্য ইংরেজী শেখায় গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই।
২৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৫৭
203144
মামুন লিখেছেন : সুন্দর ভাবে গুছিয়ে বলেছেন আপনি। তবে আমার পোষ্টটি কিন্তু ইংরেজী ভাষার সরাসরি বিপক্ষে নয়। আমি উল্লেখ করেছিলাম, গুরুত্বের দিক নিয়ে। একজন বাঙ্গালির সাথে আর একজন বাঙালি পরিচয় পর্বেই কেন বাঙ্গলা রেখে ইংরেজীতে কথা বলবে? যখন সেই পরিস্থিতি তৈরী হবে তখন, তখন সেটি সমীচিন। আমি আমার চাকুরি জীবনে কয়েকটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানে জব করেছি। সেখানকার পরিবেশই ছিল তেমন। তখন প্রয়োজনের তাগিদে আমরা ইংরেজীতে কথা বলতাম। এখনকার অফিসের পরিবেশ তেমন নয়। এখন বাঙ্গলায় কথা বলি। আমাকে ১২ ঘন্টা একটি ওয়েব বেইজড সফটয়্যারে কাজ করতে হয়, বায়ারদের সাথে যোগাযোগ প্রভৃতি কাজে ইংরেজীর বিকল্প নেই, আমি করছিও।
আমার এক শ্যালিকা চিটাগং মাস্টার মাইন্ড থেকে ও-লেভেল কমপ্লিট করেছে। সে ঠিকমত বাঙ্গলায় লিখতে পারেনা। বাঙ্গলা লিখে আমার মত ভাষা ভাষা ইংরেজীর মত। আমি চট্টগ্রাম সি ডি এ আ/এলাকার একটি ইংরেজী মাধ্যমের স্কুলে (প্লে-স্কুল) আমার শ্যলিকাকে ২০০১ ইং সালে নিয়ে যেত-স্কুল)সেখানের শিশুদেরকে খেলার সময়েও নিজেদের ভিতরে ইংরেজীতে কথা বলতে শুনেছি, ওদের স্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনা পর্যন্তও বাঙ্গলার সংস্রব বিহীন হয়ে যাচ্ছিল। এরা নিজের মাতৃভাষাকে প্রকারান্তরে অবহেলার শিক্ষাই কিন্তু পেয়ে যাচ্ছিল।
আমার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের বাঙ্গলা ভাষাকে সর্বাগ্রে রেখে এরপর অন্য ভাষার গুরুত্ব বহন করায়। আপনি ভারতের কথা উল্লেখ করেছেন, সেখানে ইংরেজী কিন্তু সেকেন্ড ল্যাঙ্গোয়েজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, আমাদের দেশে?? আর ভারতীয়দের ভিতরে হিন্দীর গুরুত্ব কিন্তু আগে, এরপর ইংরেজী। আপনি লিখেছেন, "আমাদের গৌরবের মাতৃভাষাও ঠিকমতো জানিনা। বিভিন্ন সাইনবোর্ডে, প্রচারমাধ্যমে ভুল বানানের ছড়াছড়ি দেখলে এমন মনে হয়।"- এইজন্যই তো বাংলার প্রতি গুরুত্ব বেশী দিতে হবে।
আপনার সাথে একটু তর্ক করলাম, আনন্দও পেলাম আপনার মত পাঠকের সাথে এটা করতে গিয়ে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।Happy Good Luck Good Luck
৩১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:৩৮
203593
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। আমিও এ নিয়ে এই ব্লগে ‘শেকড়ের সন্ধানে’ লেখাটা দিয়েছিলাম। আপনি যাদের কথা বলছেন তাদের কাছে ইংরেজী বলাটা অনেকটা লোক দেখানো। অন্য ভাষা শিখতে হলে যে আগে নিজের ভাষাটা ভালভাবে জানতে হবে এর গুরুত্ব ওদের কাছে ঐ একদিন-ই শুধু ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে। দেশের বাইরে আমাদের বাংলা শেখার সুযোগ নেই কিন্তু দেশে তো এমন হওয়ার কথা নয়। নিজের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা নেই বলেই করে। আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck
১২
259902
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৩৩
মামুন লিখেছেন : আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই @ বৃত্তের বাইরে।
ভালো থাকবেন।
জাজাকাল্লাহু খাইর। Rose Rose Rose

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File